বোকা মানুষদের কোনো আত্মদহন থাকে না। তাদের কোনোরূপ মর্মপীড়া, অনুশোচনা বা লজ্জা বোধ থাকে না। এ কারণে এরা কখনোই নিজের কোনো ভুল ধরতে পারে না। সেটা কোনো কাজে হোক, হোক কথায় বা লেখায়। নিজের ভুল ধরতে পারে না বলে এরা ভাবে- সে যা করছে, বলছে বা লিখছে সবই ঠিক। শুধু ঠিক নয়, একেবারে শতভাগ ঠিক। নিজের কাজ নিয়ে এর শতভাগ কনফিডেন্ট থাকে।
অপরদিকে যারা একটু বুঝদার, সমঝদার মানুষ- তারা নিজের কোনো কাজে শতভাগ সন্তুষ্টি বা আত্মপ্রত্যয়ী থাকে না। এ ধরনের ব্যক্তি একটি কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরে, একটি লেখা প্রকাশ হওয়ার পরে বা কাউকে কিছু বলে ফেলার পরেও মনে মনে সেসব নিয়ে আবার হিসাব কষেন। তিনি ভাবেন যে, কাজটি হয়তো আমার এইভাবে না করে অন্যভাবে করলে আরো ভালো হতো অথবা এই কথাটি আমার এভাবে বলা ঠিক হয়নি কিংবা আমার এই লেখাটি পরিপূর্ণ হয়নি। ঘষেমেজে আর একটু ভালো করা যেতো।
এই অসন্তুষ্টি, অপরিতৃপ্ত ও অপূর্ণতাবোধ তাকে পরবর্তীতে আরও বেশি সতর্ক করে তোলে। এই বোধ তাকে আরো বেশি বেশি সৃজনশীল কাজের দিকে ধাবিত করে। তিনি মনের ভেতর এক মর্মপিড়া অনুভব করেন। আরো বেশি নির্ভুল ও সংযত আচরণের প্রয়োজন অনুভব করে এবং সে অনুভবের প্রভাবেই এক সময় তার অবস্থা উন্নত থেকে উন্নততর অবস্থায় পৌঁছে যায়।
অপরদিকে বোকা মানুষদের কোনো অসন্তুষ্টি, অতৃপ্তি বা অপূর্ণতাবোধ থাকে না, থাকে না লজ্জাবোধ। ফলে তাদের অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয় না। তারা পড়ে থাকে একটি ঘূর্ণিপাকের ভিতর, সেখান থেকে তারা নিজেরাও বের হতে পারে না এবং অন্যরাও শত চেষ্টা করেও তাদেরকে আর সে অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে পারে না। তাই তারা যা ইচ্ছা বলতে পারে, করতে পারে, লিখতে পারে। তারা আমার এই লেখাটির অর্থ হয়তো ভুল বুঝবে নয়তো উলটো বুঝবে।
মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ
২৩ ডিসেম্বর ২৩
0 মন্তব্যসমূহ