Ticker

6/recent/ticker-posts

কী দোলা দিয়ে গেলো প্রাণে !

অবহেলিত পাড়ার অবহেলিত সম্প্রদায়ের সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত এক ছেলে ছিলেন অদ্বৈত মল্লবর্মণ। আজীবন দৈন্যতাকে সঙ্গী করে চলেছেন, তবে দানে ছিলেন অকৃপণ।


শত প্রতিকূল থেকে জয় করেছিলেন নিমগ্ন, নিরবচ্ছিন্ন নিরলস সাহিত্য চর্চায়। ব্যক্তি হিসেবেও ছিলেন নির্লোভ অহংকারী। অর্থাভাবে চিকিৎসা ব্যাহত হওয়ায় বেশিদিন জীবিত না থাকতে পারলেও তাঁর মহৎ কর্ম তাঁকে করেছে অমর।


তাইতো জন্মের শত বছর পরেও এখনো মানুষ তাঁকে নিয়ে আলোচনা করেন, তাঁর সৃষ্টি নিয়ে চর্চা করেন। এখনো মানুষ ভাবে অদ্বৈতকে জানার, বোঝার, চর্চা করার, গবেষণা করার আরো অনেক কিছু বাকী রয়েছে।


শত বছর পরেও মানুষ তার জন্ম উৎসবে আনন্দে মেতে ওঠে। একজন সাধারণ মানুষ থেকে অসাধারণ মানুষ হয়ে ওঠার পেছনে তাঁর মেধা, শ্রম ও সৃষ্টি এখনো মানুষের মনে বিস্ময় সৃষ্টি করে।



যে গভীর জীবনবোধ থেকে তিনি মালোপাড়ার মানুষের জীবনাচারণের সুখ-দুঃখের বর্ণনা করেছেন, যে আসীম মমতায় প্রিয় তিতাসের রূপ, বৈচিত্র্য বর্ণনা করেছেন, যে প্রাজ্ঞ দর্শন থেকে তিনি জীবনকে দেখেছেন, যে সাবলীল ভাষায়, বাক্য ও বর্ণ বিন্যাসে তিনি তাঁর ভাবনাকে প্রকাশ করেছেন, যে নিপুণ কারুকার্যে তিনি সময়কে ধারণ করেছেন- সে সবকিছুই এখনও পাঠক মনে দোলা দিয়ে যায়। তিতাসের ঢেউয়ের দোলার মতোই সে দোলা চির বহমান।
 

হাসি-আনন্দে, উল্লাসে-উৎসবে, প্রেম-রোমাঞ্চ-বিরহে, প্রত্যাশা-প্রাপ্তিতে, সফলতা-ব্যর্থতায়, ঝগড়ায়-বিভাজন ও ঐক্যে, সম্প্রদায় ও সাম্প্রদায়িকতায়, ধর্মে-বর্ণে, ট্রাজিকতায়, দৈন্যতায়-সমৃদ্ধিতে, ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ভরপুর এক অনন্য উপন্যাস ‘তিতাস একটি নদীর নাম’।


এই কালজয়ী উপন্যাসের অমর স্রষ্টা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতিসন্তান অদ্বৈত মল্লবর্মণের ১১০ তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় গতকাল। অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতির গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্র এবং সাহিত্য আয়োজিত আজকের অনুষ্ঠানমালায় ক্ষুদ্র অংশগ্রহণ আমাকে প্রাণিত করেছে।


মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ

০২ জানুয়ারি ২০২৪

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ