গতকাল
ছিল তাসফিয়ার স্কুলের শেষ ক্লাস।
তাসফিয়ার স্কুলে ভর্তি হওয়ার
কথা ছিল ২০২২ সালে। কিন্তু সেই
বছর আমার একটি অফিসিয়াল
সমস্যার কারণে তাসফিয়াকে স্কুলে
ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। এক বছর
বাসায় পড়িয়ে পরের বছর
অর্থাৎ এই বছরের শুরুতে
তাকে স্কুলে ভর্তি করানো
হয়। ইচ্ছে ছিল
সূর্যমুখী স্কুলে ভর্তি করার,
কিন্তু লটারিতে নাম না উঠায়
সেটা করা সম্ভব হয়নি। সময় মত
স্কুলে ভর্তি করাতে পারিনি
বলে তার বর্তমান স্কুলে
ভর্তি করানোর সময় তাকে
এক ক্লাস উপরে ভর্তি
করি।
বিষয়টা
তাসফিয়া জন্য ছিল চ্যালেঞ্জিং। কারণ সে
যাদের সহপাঠী হতে যাচ্ছে
তারা সবাই এক বছর
স্কুলে পড়ে এসেছে, আর
সে বাসায় পড়েছে।
সহপাঠীদের সাথে লেখাপড়ায় তাল
মিলাতে পারবে কি না
? এসব প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক
খাচ্ছিল। তাছাড়া সহপাঠীদের
তুলনায় বয়সের সে কিছুটা
ছোট। এই বিষয়
নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম আমরা।
কিন্তু তাসফিয়ার মায়ের ঐকান্তিক চেষ্টায়
তাসফিয়া নিয়মিত ক্লাসের পড়া তৈরি করতে
চেষ্টা করতে থাকে ।আলহামদুলিল্লাহ প্রতি ক্লাস টেস্ট
এবং সাময়িক মূল্যায়ন পরীক্ষাগুলোতে ভালো রেজাল্ট করেই
এগিয়ে যেতে থাকে সে।
ক্লাসের
যে কয়েকটি ছোট ছাত্রছাত্রী আছে
তার মধ্যে তাসফিয়া একজন। ফলে শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ অন্যান্য সহপাঠীদের কাছে সে একটুও
বেশিই আদর পেয়ে লেখাপড়া
করে এসেছে। এক
বছরে স্কুলে না যাওয়ার
জন্য বাইনা ধরেছে বড়জোর
৬/৭ দিন।
তা নাহলে সবসময়ই বেশ
আগ্রহ নিয়ে স্কুলে গিয়েছে। আমি বা
ওর মা যখন তাসফিয়াকে
নিয়ে স্কুলে দিয়ে আসি,
ক্লাসের কাছাকাছি যেতে ওর সহপাঠীরা
তাসফিয়াকে কোলে করে নিয়ে
ক্লাসে ঢোকে। আমার
সামনেই তাকে চুমু দিতে
থাকে। এইসব দৃশ্য
দেখে আবার মন জুড়িয়ে
যায়। স্ট্যান্ডার্ড স্কুল
অব টোটাল এডুকেশন-এর
লেখাপড়া সিস্টেম ও মানও ভালো। স্কুলের স্যার
ম্যাডামদের আন্তরিকতাও ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।
১৬ তারিখ থেকে তাসফিয়ার বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। লেখাপড়ায় ক্লাসের সেরা ছাত্রী হোক- এমনটি আমাদের কখনোই কাম্য নয়। কিন্তু লেখাপড়া ও অন্যান্য এক্টিভিটিতে সে ভালো মানুষ হোক- এমনটাই প্রত্যাশা করি। তাসফিয়া এবং তার সহপাঠীরা আপনাদের সবার দোয়া প্রার্থী। আপনাদের সন্তানদেরও লেখাপড়া হোক আনন্দ ও সাফল্যময়।
তাসফিয়ার স্কুল জীবন- ২
মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ
১৪ নভেম্বর ২০২৩
0 মন্তব্যসমূহ