একটি কথা প্রচলিত রয়েছে যে, দিল্লির লাড্ডু যিনি খেয়েছেন তিনি যেমন পস্তান। যিনি খাননি তিনিও পস্তান। প্রচলিত এই বাক্যের সঙ্গে মিল আছে বিয়ের। অর্থাৎ যারা বিয়ে করেছেন তারা যেমন পস্তান, যারা বিয়ে করে নাই তারাও আবার পস্তান। এই পস্তানো যতই হোক, বিয়ে নিয়ে মহোৎসব থেমে থাকেনি কখনোই।
যারা বিয়ে করেছেন তারা নিজের শত অপ্রাপ্তি, অপূর্ণতার মাঝেও অন্যদেরও বিয়ে করতে উৎসাহিত করেন। এমনকি বাবা তার ছেলেকে, মা তার মেয়েকে বিয়ে করতে উৎসাহিত করেন। এখনকার যুগের ছেলে মেয়েদেরকে অবশ্য খুব বেশি উৎসাহ দিতে হয় না। তারা সময়ের আগেই নিজেদের পাত্রপাত্রী ঠিক করে থাকে বরং তারাই মা-বাবাকে উৎসাহিত করে তাদেরকে জলদি জলদি বিয়ে করিয়ে দিতে।
সে যাই হোক, জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের মাধ্যমে শুরু হয় আমাদের সংসার যাত্রা। নারী-পুরুষের যুগলবন্দিতে মানব জীবন যেমন সার্থক ও পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তেমনি পৃথিবী হয়ে উঠে আরও মধুময়। হাতে হাত ধরে কিছু প্রাপ্তি, কিছু সুখ, কিছু দুঃখ-কষ্টকে সঙ্গে নিয়ে জীবন পাড়ি দিচ্ছেন অসংখ্য দম্পতি। কেও পাঁচতলাতে সুখ খুঁজছেন, কেউ গাছতলাতে। কেউ পেয়েছেন কেউবা পাননি। আশা-নিরাশার দোলাচালেই চলছে আমাদের সংসার নামক জীবনের ভেলা।
আবার এর বিপরীত চিত্রও আছে। বিয়ে করে নিজের সুন্দর গোছানো জীবনটি অনিশ্চিত হয়ে গেছে অথবা মৃত্য মুখে পতিত হয়েছে অসংখ্য মানুষের। দাম্পত্য কলহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, আত্মহত্যা বা হত্যার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত।
ভালোবেসে প্রিয় মানুষের হাত ধরে অনিশ্চিত জীবনের পথে যাত্রা করে কেউ কেউ প্রাসাদ গড়েছেন। কেউ আবার হারিয়ে গেছেন অন্ধকারেই।
পৃথিবীর আদিমতম এই খেলায় নামতে গিয়ে রাজ্যে রাজ্যে যুদ্ধে জড়িয়ে গেছেন অনেক রাজা। ধ্বংস হয়ে গেছে বহু সাম্রাজ্য। ইতিহাসের ‘ট্রয় নগরী’ বা সাহিত্যের ‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটক অথবা সিনেমার ‘পদ্মাবত’ সেই কথাই প্রতীয়মান করে।
কিন্তু তারপরও বিয়ে বা সংসার যাত্রা কখনো থেমে থাকেনি। থেমে থাকবেও না। গানের ভাষায় ‘একটা চাবি
মাইরা দিছে ছাইড়া জনম ধইরা চলতে আছে…..”
যাপিত জীবনের সুখ-দুঃখ, পাওয়া না পাওয়ার এমন অসংখ্য সংসারের গল্প নিয়ে পৃথিবীতে রচিত হয়েছে অনেক ছড়া, কবিতা, গল্প, উপন্যাস। এসবের বাইরেও সংসার অনেক বিস্তৃত একটি বিষয়। সংসার নিয়ে হাজারো সাহিত্যকর্ম রচিত হলেও সম্ভবত এই প্রথম সংসার নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সংখ্যা প্রকাশ করেছে দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সাময়িকী নব ভাবনা।
নব ভাবনার এই সংখ্যা না পড়লে আপনার সংসার জীবন যেমন অপূর্ণ মনে হবে, তেমনি মনে হবে আপনার সাহিত্য জীবনও অপূর্ণ। আর যারা সংসার শুরুও করেনি তাদের জন্য তো সংসার সংখ্যা পড়া আরও বেশি প্রয়োজনীয়। সংসার সংখ্যার প্রবন্ধ ও গল্পগুলোর শিরোনাম পড়ে আমার এমনটাই মনে হচ্ছে।
এবারের সংসার সংখ্যায় আমার লেখা একটি প্রবন্ধ প্রকাশের জন্য মনোনীত হয়েছে। নব ভাবনায় পর পর তিনটি সংখ্যায় ছড়া কবিতা প্রকাশ হওয়ার পর এই প্রথম একটি প্রবন্ধ প্রকাশ হচ্ছে জেনে আমি খুব আনন্দিত। নব ভাবনা পরিবারের প্রতি অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
সংসার সংগ্রহ করতে নব ভাবনার টিমের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া লেখক, পাঠকগণ কবি আমির হোসেন স্যার অথবা আমার সাথেও যোগাযোগ করতে পারেন।
সবার সংস্যার যাত্রা শুভ হোক
মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ
৯ জুন ২০২৩
0 মন্তব্যসমূহ