বৃষ্টি বিদ্যুতের অমর প্রেম

বৃষ্টি আর বিদ্যুৎ একে অপরকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। কিন্তু দুজনের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। বৃষ্টি বড়লোকের মেয়ে, বাস করে পরীদের রাজ্য মেঘের প্রসাদে। ঐদিকে বিদ্যুৎ মাটিতে বাস করা পাড়ার গুন্ডা মাস্তান টাইপের ছেলে। তবে দিন রাত মানুষের উপকার করে বেড়ানো তার নেশা।

সুন্দরী মেয়েরা বখাটেদের প্রেমে পড়বে এটাই চিরন্তন সত্য। তার উপর আবার উপকারী বখাটে। তাই সুদর্শনা বৃষ্টি তার নরম শীতল মনকে সঁপে দিয়েছে বিদ্যুতের কাছে। বিদ্যুৎ যতই তেজি, রাগী হোক না কেন বৃষ্টির ঝরঝর ঝরে পড়ার নৃত্যে, ঝুমঝুম গানের সুরে একেবারে ফিদা হয়ে গেছে। বৃষ্টির রূপে গুণে মুগ্ধ হয়ে নিজেকেই ভুলতে বসেছে সে। নেচে গেয়ে গোপনে চলছে তাদের অভিসার। তারা একে অপরের প্রেমে হাবুডুবু খেতে লাগলো।

কিন্তু তাদের এই প্রেম পিরিতির খবর বেশিদিন গোপন থাকলো না। দুষ্ট আইপিএস কীভাবে যেন এই খবর জেনে গেলো। সে জেনারেটর, চার্জার ফ্যানের কাছে এই খবর বলে দিলো। বৃষ্টি বিদ্যুতের মিলন মানে তাদের ব্যবসায় বিরাট লোকসান। তাদের কূটকৌশলে এক এক করে এই খবর চলে গেলো দুই পরিবার আর এলাকার লোকজনের কাছে।

বৃষ্টি আর বিদ্যুতের এই অসম ভালোবাসা মেনে নিলোনা তাদের এলাকার লোকজন। এলাকার লোকজনের আলোচনা, সমালোচনা আর কানাঘুষায় দুই পরিবারের দিনরাতের আরাম হারাম হওয়ার জোগাড়। লোকলজ্জার ভয়ে তাদের বাবা-মা বৃষ্টি বিদ্যুতের সম্পর্ককে মেনে নিতে পারছে না, আবার তাদের আলাদা করতেও পারছে না।

ভিলেন কাঠুরিয়া, সমিল, ফার্নিচার এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মানুষকে ভুলভাল বুজিয়ে বৃষ্টি আসার পথ বন্ধ করতে দেশের গাছপালা কেটে সাবাড় করে ফেলছে। তাদের পকেট আর দেশের আবহাওয়া এখন মহা গরম।

বিদ্যুতের সঙ্গী সাথীরা বৃষ্টিকে ভোলাতে না পেরে বিদ্যুতের শক্তি ক্ষয় করতে তার জ্বালানি আমদানি বন্ধ করে দিলো। অবশ্য তাদের অন্য অসৎ উদ্দেশ্যও ছিল। দিনে দিনে বিদ্যুৎ তার মহাশক্তি হারিয়ে ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টিকে ভুলতে পারছে না কিছুতেই।

সম্পর্কের যখন এই রকম টানপোড়েন চলছে তখন বৃষ্টি আর বিদ্যুৎ সিদ্ধান্ত নিলো পালিয়ে যাওয়ার। যদি ধরা পরে যায় তাহলে দুজনে আ ত্ম হ ত্যা করবে। এক সঙ্গে বাঁচতে না পারুক এক সঙ্গে মরে যাবে তারা। তবুও একে অপরকে ছাড়বে না। তার আগ পর্যন্ত যতদূর পারে পালিয়ে যাবে তারা। 

বৃষ্টিকে মনে মনে ভালোবাসতো বৃক্ষ। কিন্তু সে বৃষ্টিকে নিজের মনের কথা বলার আগেই বৃষ্টি বিদ্যুতকে ভালোবেসে ফেলেছে। বৃষ্টির সুখের কথা চিন্তা করে বৃক্ষ আর বৃষ্টি কিছু বলেনি বরং নীরবে চোখের জল ফেলে বৃষ্টি আর বিদ্যুকে পালিয়ে যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে দিলো। 

অতঃপর বৃষ্টি আর বিদ্যুৎ এখন বাংলাদেশ থেকে দূরে কোথাও পালিয়ে যাচ্ছে।

সমাপ্ত

সুপারহিট বাংলা ছায়াছবি

বৃষ্টি বিদ্যুতের অমর প্রেম

রচনা ও পরিচালনা

মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ

দুপুর ৩.৩

১ জুন ২০২৩