Ticker

6/recent/ticker-posts

তাসফিয়ার তিনটি মজার গল্প

তাসফিয়ার তিনটি মজার গল্প

(এক)

মেয়ে ব্যথা পেয়েছে শুনে তারাতারি বাসায় ফিরলাম। কেচি গেটের কাছে কলিংবেলের বিকল্প সুইচ টেপায় আমি তৃতীয় তলার উঠার আগেই ওরা মা-মেয়ে দরজা খুলে দাঁড়িয়ে থাকে। সিঁড়ির কাছ থেকেই বাবা-মেয়র কথোপকথন শুরু, বললাম ‘আম্মু; তুমি কোথায় ব্যথা পেয়েছো’। মায়ের সান্তনায় ওর কান্না থেমে গিয়েছিলো আরো আগেই, তবু আমাকে শোনানোর জন্য আধো আধো কান্না সুরে বলল ‘আসো; দেখাচ্ছি তোমাকে’ বলেই আমার অপেক্ষা না করে বাসার ভিতের যেতে লাগলো। একটা ভুল প্রশ্ন করে ফেলেছি তা বুজতে বেশি দেরি হলো না আমার। বুজতে পেরে আমি হাসতে হাসতে বললাম ‘কোথায় নিয়ে যাচ্ছো আমাকে’। সে ততক্ষণে বেড রুমের টি-টেবিল দেখিয়ে বলছে ‘এই যে এখানে ব্যথা পেয়েছি’। (যা ধারণা করেছি সেটাই সত্যি হলো) আমি হাসতে হাসতে বললা, ‘আরে বেটি…তোমার শরীরে কোথায় ব্যথা পেয়েছো সেটা দেখাও’। এবার ও কন্ঠে আরো জোড় দিয়ে বলল ‘শরীরে ব্যথা পাইনিতো তো’। আমি এবার অবাক হয়ে বলাম ‘তাহলে কোথায় ব্যথা পেয়েছো’। সে উত্তরে বলল ‘আমার পা’য়ে”। (ওর যুক্তিতে পা শরীরের অংশ নয়)। টেবিলকে একটা চড় লাগিয়ে ওর পায়ে একটু চুমো দিয়ে আমরা রাজা-রানী হাসতে লাগলাম। (মেয়ের কাণ্ডকারখানায় নিজেরদের ছেলেবেলা খুজে পাই।)

(দুই)

বাসায় মাঝে মাঝে মাছির উৎপাত বেড়ে যায়। যাবেই না কেন সারা ঘরে মাছির খাদ্য (গুড়ো দুধ, চিনি, বিস্কিট, কেক, চকলেট, চিপ ইত্যাদির টুকরো) ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। আমি মাঝে মাঝে মাছিগুলো ঝাড়ু দিয়ে মেরে কমাই।তো সেদিন দুপুরে মাছি মারছিলাম। মেয়ে চট করে বলল ‘আব্বু আমিতো অনেক বড়ো, মাছিগুলোতো আমাকে ডাইনোসর ভাবছে’। এইটুকু বয়সে ওর প্রশ্ন বা উত্তর শুনে অবাক না হয়ে পারি না। ওর মাকে ডেকে বললাম ‘তোমার মেয়ের কল্পনা শক্তি দেখো’, মাছিগুলো নাকি ওকে ডায়নোসর ভাবছে। সে প্রায় সময় এমন চমৎকরে মজার মজার কথা বলে, আমরা(রাজা-রানী) সামনে না থাকলে একজন আরেকজন কে সেই কথাগুলো শেয়ার করি। এই যুগের বাচ্ছা-কাচ্চা কার্টুন দেখে অনেক কিছু শিখে ফেলে। 

(তিন)

সেদিন রাতে ও নাংকু-পাংকু হয়ে খেলছে। ওর আম্মু বলল ‘তাসফিয়া একটা হাপ্পি (হাফ প্যান্ট) পড়ে নাও, মানুষতো তোমার লজ্জ্বা দেখে ফেলবে’। তাসফিয়া সাথে সাথে উত্তরে বলল “রাতের বেলাতো মানুষ আমাদের দেখতে পারবে না”। (মানে জানালা দিয়ে বাহিরে অন্ধকার দেখা যাচ্ছে, তার যুক্তি হলো বাহির থেকে এখন কেউ ওকে দেখতে পারবে না।) এতো দ্রুত পাল্টা যুক্তি দেয়া শুনে আমরাতো হেসে খুন। অব্যশ্য ওর যুক্তি না মেনে শেষমেশ ওকে পোশাক পড়ানো হয়েছে।

তাসফিয়ার মজার মজার কথা অন্য সবাই আরো শেয়ার করবো। ওর জন্য সবাই দোয়া করবেন।

মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ

০৮ এপ্রিল ২০২২খ্রি.


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ