বৈশাখী উৎসবের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গতকাল ছিল নির্বাচিত গ্রন্থের ‘পাঠ আলোচনা। যেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খ্যাতিমান দু’জন লেখকের গ্রন্থের উপর পাঠ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। একটি গ্রন্থ ছিল বিশিষ্ট লেখক-অধ্যাপক মুকসুদ আজিজ মহোদয় রচিত আঞ্চলিক ছড়া গ্রন্থ ‘তিতাস মেঘনার পাড়অ পারঅ ’। অপর গ্রন্থটি হলো ছিল বিশিষ্ট কবি ও প্রাবন্ধিক ড. শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক মহোদয় রচিত কাব্যগ্রন্থ ‘হাঁট পেরুলেই তিতাস’।
প্রথম গ্রন্থটির উপর আলোচনা করেন লোক গবেষক ও লোকশিল্প সংগ্রাহক জহিরুল ইসলাম স্বপন মহোদয় এবং কবি ও প্রভাষক এম এ হানিফ স্যার এবং দ্বিতীয় গ্রন্থটির উপর আলোচনা করেন কথাসাহিত্যিক আমির হোসেন স্যার। তাঁদের পাশাপাশি নির্ধারিত আলোচ্য গ্রন্থ হিসেবে তালিকাভুক্তি ছিল আমার সদ্য প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ‘ছোট নদী ছোট ঢেউ।’
ছোটবেলা থেকে এই বৈশাখী উৎসব দেখে দেখে বড় হওয়া আমরা। এর আগেও এই বৈশাখী উৎসবসহ অন্যান্য আরো বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত নানা অনুষ্ঠান ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত নামাঙ্কিত এই মঞ্চে কবিতা পাঠ করেছি, বক্তব্য প্রদান করেছি, উপস্থাপনা করেছি। অনেক অনুষ্ঠানের আয়োজক বা আয়োজক সহযোগী হিসেবে কাজ করেছি। কিন্তু বৈশাখী উৎসবের এই মঞ্চে আমার মতো ক্ষুদ্র লেখকের বইয়ের উপরে দুটো কথা আলোচনা হবে- এটি আমার জন্য পরম আরাধ্য একটি বিষয়। এই সম্মানজনক সুযোগে প্রদানে আমি সাহিত্য একাডেমি পরিবার, বিশেষ করে শ্রদ্ধেয় কবি ও গবেষক জয়দুল হোসেন স্যারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও ব্যক্তি জীবনে বিভিন্ন অন্যায়, অসঙ্গিত, অত্যাচার, অনিয়ম ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে রচিত গল্পগ্রন্থ ‘ছোট নদী ছোট ঢেউ’ গ্রন্থটির ওপর আলোচনা উপস্থাপন করেছেন আমার আরেকজন পরম শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব শ্রদ্ধেয় পরিমল ভৌমিক স্যার। সরাসরি ছাত্র না হয়েও আমি যাকে আমার একজন অভিভাবক ও শিক্ষক মনে করি।
শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের মুখে আমার বইয়ের আলোচনা শুনে প্রথমে আনন্দিত হলেও পরে মঞ্চে বসেই আমি লজ্জা পাচ্ছিলাম। পরম স্নেহে আলোচ্য গ্রন্থে তিনি যেই বাক্যগুলো সংযোজন করেছেন সেগুলো আমার জন্য ‘বিরাট আশীর্বাদ’। তিনি আমাকে আজীবন কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন। ‘ছোট নদী ছোট ঢেউ’ প্রকাশে সহযোগিতা করেছেন শ্রদ্ধেয় কথাসাহিত্যিক আমির হোসেন স্যার। এই শুভ মুহূর্তে আমির হোসেন স্যারের প্রতি ধন্যবাদ প্রকাশ করছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে মূল স্রোতে থেকে যারা সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা করেন তাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ আমি। এখানে সাহিত্য চর্চা করা সকলের সাথেই আমি যথাসম্ভব শ্রদ্ধা রাখার চেষ্টা করি। আমি মনে করি তাঁরা প্রত্যেকেই আমার গুরুজন, আমার শিক্ষক। তাঁদের কাছ থেকে প্রতিনিয়তই আমার শেখার আছে। তাঁরাও আমাকে নানা কাজে সমানতালে উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা দিয়ে যান। আমার প্রতি গুরুজনদের স্নেহ এবং ভালোবাসার এই প্রতিদান দেয়া কখনোই সম্ভব নয়। শুধু সকলের কাছে দোয়া চাই আমি যেন আমার সাহিত্যচর্চা জীবন অব্যাহত রাখতে পারি। এবং তাঁদের মর্যাদা রক্ষা করে চলতে পারি।
সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন ভাইয়ের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইল। নিজের ব্যস্ততা থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিনের অনুষ্ঠানমালা সুচারুভাবে সম্পাদন করতে তিনি যথেষ্ট ভূমিকা রাখছেন। পাশাপাশি তিনি প্রতিদিন সকল আলোচক ও অংশগ্রহণকারীদের ছবি তুলে অমলিন স্মৃতিগুলো চিরস্মরণীয় করে রাখছেন।
সবার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল। বৈশাখী উৎসব সফল হোক উৎসবের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক।
৫ বৈশাখ ১৪৩২ (১৯ এপ্রিল ২৫)
0 মন্তব্যসমূহ