বাবারা ভালো থাকুক-এপারে, ওপারে।
১৯ জুন বিশ্ব বাবা দিবস। আমাদের সবার জীবনে বাবাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা, সংগ্রাম-সাধনা আর ভালোবাসার সীমা অসীম। প্রতিনিয়ত নিজেকে নিঃশেষ করে বাবাগণ আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ে দিয়ে যান। কথায় বলে পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে কিন্তু একটিও খারাপ বাবা নেই। আসলে ব্যক্তিজীবনে মানুষ যত খারাপই হোক কিন্তু যখন তার পরিচয় একজন বাবা, তখন তিনি তার সন্তানের কাছে একজন রাজা, একজন ডাক্তার, একজন শিক্ষক, একজন বন্ধু, একজন অভিভাবক।
পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের ভিড়ে প্রতিটি মানুষের জীবনে তার বাবাই আসল নায়ক। কারণ বাবা শুধু আমাদেরকে জন্ম দেননি, তিনি আমাদেরকে হাঁটতে শিখিয়েছেন, বলতে শিখেছেন, বাঁচতে শিখিয়েছেন। আমাদের দিকে ধেয়ে আসা সকল বিপদ-আপদ, ঝড়ঝঞ্জাকে হাসিমুখে মেনে নিয়ে তিনি আমাদেরকে আগলে রেখেছেন। ছোটবেলায় যারা বাবাকে হারিয়েছেন, যাদের জীবনে বাবার মধুর স্মৃতি নেই, অল্প বয়সে বাবা চলে যাওয়ায় যাদের জীবন হয়ে ওঠেছিলো বিষাদময়, জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে তারা বাবাকে ভীষণভাবে অনুভব করেন।
জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও অনেকের চোখে বাবাকেই মনে পড়ে বারবার। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে বাবা তোমার সন্তান আজ বড় হয়েছে। দেখো চারিদিকে তোমার সন্তানের কতো সুনাম। সে না বলতে পারার ইচ্ছাটি যখন কুরে কুরে খায় তখন প্রার্থনায় মহান আল্লাহতালার দরবারে দুই হাত তুলে একটি কথাই উচ্চারিত হয় “রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বায়ানি সাগিরা।” সনাতন ধর্মীরা বলেন “দিব্যান্ লোকান্ স গচ্ছতু”।
বাবাদের কে নিয়ে আমাদের কত স্মৃতি, কত আবেগ, কত ভালোবাসা! তারা ছোটবেলায় আমাদেরকে যেভাবে আদর করেছেন, শাসন করেছেন, ভালোবাসা দিয়েছেন, আমাদের ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করেছেন। তেমনিভাবে বড় বেলায় তাদের প্রতি আমাদের অনেক দায়িত্ব, কর্তব্য রয়েছে। প্রতিটি সুসন্তান তার বৃদ্ধ বাবার প্রতি যত্নশীল। কিন্তু আবার এমন কুসন্তান রয়েছেন যারা বাবার প্রতি ন্যূনতম দায়িত্ব পালন দূরের কথা ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ জানায় না। তাদের সবার বিবেক জাগ্রত হোক, ভালো থাকুক পৃথিবীর প্রতিটি বাবা। বন্ধ হোক বৃদ্ধাশ্রম নামে বাবাদের কারাগার। বাবারা ভালো থাকুক-এপারে, ওপারে।
প্রতিষ্ঠাতা, সভপতি-কবির কলম।
১৯ জুন ২০২২ খ্রি.
0 মন্তব্যসমূহ