Ticker

6/recent/ticker-posts

হাসানের বিদেশ যাত্রা একটি প্রতিভার অকাল মৃত্যু


 হাসানের বিদেশ যাত্রা একটি প্রতিভার অকাল মৃত্যু

ডিজাইন হাউজের স্বত্বাধিকারী হাসান বয়সে ছোট হলেও সে ছিল আমার গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং আইটি প্রশিক্ষক এসব বিষয়ে সে অনেক দক্ষ ছিল সেই সাথে আমার সকল প্রকাশনার কাজের পার্টনার আমাদের যৌথ আইডিয়া তার নিপুণ হাতের একক কারিশমায় মাত্র দেড় বছরে ছোট বড় মোট ১৩টি প্রকাশনার কাজ করেছি এই কাজগুলো ছিল আমাদের জন্য এক্সপেরিমেন্টাল ওয়ার্ক কারণ আমরা দুজনেই এসব বিষয়ে ছিলাম অনেকটাই আনকোরা তাই নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে প্রতিটি প্রকাশনা সাজানোর চেষ্টা করেছি আমাদের প্রত্যেকটি প্রকাশনা ছিল একটি আরেকটি থেকে ব্যতিক্রমী ডিজাইন নতুনত্বে ভরা

এসব ছাড়াও নামে বেনামে করেছি প্রায় অর্ধশত ছোট বড় অনুষ্ঠানের বিভিন্ন কাজ অন্যদের কাছ থেকে বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব পেয়ে আমি ভরসা করেছি হাসানের উপরেই আর ব্যক্তিগত কত কাজ করেছি তার কোনো হিসেব নেই আমাদের পরিবারের সবার সাথে ওর সম্পর্ক ছিল নিকট আত্মীয়র মতই পুরো শহরে সে একজনই ছেলে ছিল যে- প্রয়োজনে আমরা একে অপরের কাছে টাকা ধার নিতাম আত্মীয় স্বজনের বাহিরে তাসফিয়া একমাত্র তার সাথেই মিশতো

হাসান হঠাৎ করে বিদেশ চলে যাওয়ায় আমার চলমান আটটি প্রকাশনার কাজ (বই, সাময়িকী স্মরণিকা) শেষ করা নিয়ে যথেষ্ট হিমশিম খাচ্ছি যার বেশ কয়েকটি কাজ সে শুরু করে গিয়েছে এই কাজগুলো যথাসময়ে শেষ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি এই আটটি প্রকাশনা ছাড়াও আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আরো ছয়টি প্রকাশনার কাজ প্রস্তাবনা আছে এই ১৪টি কাজ শেষ না করা পর্যন্ত নতুন করে আর কোনো প্রকাশনার কাজের দায়িত্ব নিতে চাচ্ছি না সত্যিই বলতে নিজের সক্ষমতার চাইতে এখন লোড বেশি হয়ে গেছে

হাসান দোকান নেয়ার প্রথম কাস্টমার আমি প্রথম ছয়/সাত মাস আমিই ছিলাম ওর প্রধান কাস্টমার পরবর্তীতে তার কাজ বেড়ে যাওয়ায় আমাকেই কাজের শিডিউল পেতে বেগ পেতে হত এতে অবশ্য আমি অখুশি হইনি, কারণ তার নিজের ইচ্ছা, উদ্যম উদ্যোগ হলেও স্বল্প পুঁজি নিয়ে আমার হাত ধরে ব্যবসা শুরু করেছে আমি চাইতাম তার ব্যবসা রান করুক কয়েক বছর পর দুজন মিলে বড় প্রতিষ্ঠান করার পরিকল্পনাও ছিল, কিন্তু তা আর হলো কই!

আপনারা যারা ছলে, বলে, কৌশলে হাসানের টাকা মেরে খেয়েছেন, তারা কাজটা ভালো করেননি আপনার এমনটা না করলে সে হয়তো খুব সহজে বিদেশ যেত না আমারও সকল কাজে ব্যাঘাত ঘটত না ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বই বা সাময়িকী প্রকাশ করার জন্য খুব ভালো ডিজাইনার পাওয়া যায় না এই জায়গাটি হাসানের মাধ্যমে কিছুটা হলেও পূরণ করা যেত দেশে কোনো গ্রুপ অব কোম্পানি অথবা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতেও ভালো অবস্থান তৈরি করতে পারতো সে তাই বলছি হাসানের এই বিদেশ যাত্রা একটি প্রতিভার অকাল মৃত্যু ছাড়া আর কিছু নয়

যাই হোক- আশা করছি খুব শিগগিরই আমার নতুন কম্পিউটার সেটাপ রেডি হবে তারপর নব উদ্যমে সবগুলো কাজ করতে পারবো সকলের সহযোগিতা কাম্য

মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ

০৩ সেপ্টেম্বর ২৩


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ