Ticker

6/recent/ticker-posts

ধ্বংসের মুখে বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের বাড়ি ॥ শেষস্মৃতি রক্ষার দাবিতে চলছে আন্দোলন।

ধ্বংসের মুখে বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের বাড়ি ॥

শেষস্মৃতি রক্ষার দাবিতে চলছে আন্দোলন।

মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ

বিগত আড়াইশত বছরে বাংলাদেশ ও অবিভক্ত বাংলার সমস্ত সফল আন্দোলনগুলোকে প্রধানত তিনটি ভাগে বিভক্ত করা যায়। স্বাধীনতা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন ও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন। এই তিনটি আন্দোলন বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের সংগ্রাম-গৌরব-বীরত্ব, সৌর্য-বীর্য, অহংকার ও আত্মপরিচয়ের স্মারক বহন করে। এই আন্দোলন সমূহের প্রত্যেকটি ঘটনা, প্রত্যেক ব্যক্তি, প্রত্যেক স্থাপনা, এমনকি প্রত্যেক বস্তুই আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও মর্যাদার চিহ্ন। 

নিজের নাম-পরিচয় ও সম্পদ সংরক্ষণ করা যতটা প্রয়োজনীয় ততটাই বা তার চেয়েও বেশি প্রয়োজনীয় হলো জাতীয় জীবনের মহান ব্যক্তি, স্থাপনা ও স্মারকগুলো সংরক্ষণ করা। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য, বাঙিল জীবন মান উন্নয়নের জন্য যে সমস্ত মহান ব্যক্তিগণ সংগ্রাম করেছেন, চেষ্টা-সাধনা করেছেন, আত্মবলিদান দিয়েছেন তাদেরকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা এবং তাদের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করা আমাদের রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও ব্যক্তিগত নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু নানান সময়ে রাষ্ট্র, সমাজ এবং ব্যক্তির দায়িত্বে অবহেলা, উদাসীনতা ও হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার মানসে এই সমস্ত মহান ব্যক্তিগণ তাদের প্রাপ্য সম্মান ও মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হন। তাদের স্মৃতি চিহ্নগুলো সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হলে, আমাদের মহামানবদের চরিত্র, ত্যাগ, আত্মবলিদান গুলোকে নতুন প্রজন্মর সামনে তুলে ধরতে হবে। এজন্য মহামানবদের সকল স্মৃতি চিহ্নগুলোকে যথাযথভাবে সুরক্ষা প্রদান ও সংরক্ষণ করতে হবে।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব

ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি ইতিহাস-ঐতিহ্য সমৃদ্ধ জেলা। প্রাচীনকাল থেকে এই জেলার সুখ্যাতি সুদূর বিস্তৃত। অসংখ্য মহামানবের জন্মভূমি এই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় তাদের স্মৃতি চিহ্ন খুব কমই সংরক্ষণ করা হয়েছে। নানান কারণে অবশিষ্ট অনেক স্মৃতিচিহ্ন এখন ধ্বংস প্রায়। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সূর্যসন্তান, অবিভক্ত ভারতের ব্রিটিশ বিরোধী, স্বাধীনতা আন্দোলন ইতিহাসের আপোষহীন বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের সর্বশেষ স্মৃতি, তার জন্মস্থান জরাজীর্ণ বাড়িটি সংরক্ষণের অভাবে ধ্বংস হতে চলেছে। দেশে প্রত্নতত্ত্ব আইন থাকলেও অজ্ঞাত কারণে গুরুত্বপূর্ণ এই বাড়িটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় আসেনি আজও। যার ফলশ্রুতিতে ঐতিহাসিক এই বাড়িটি এখন কারো ব্যক্তি মালিকানাধীন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের কালীকচ্ছ গ্রামে অবস্থিত এই বাড়িটি গত ৩০ বছরে ভেঙে ফেলার জন্য অনেকবার অপচেষ্টা করা হয়েছে। বাড়িটি রক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লেখক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও সচেতন জনগণ বরাবরই নানান দাবি উত্থাপন ও আন্দোলন করে আসছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরসহ অন্যান্য উপজেলার বুদ্ধিজীবীরাও নিজ নিজ অবস্থান থেকে জোরালো ভুমিকা রেখে বাড়িটি রক্ষার জন্য দীর্ঘদিন থেকেই দাবি জানিয়ে আসছেন। 

বাংলা মহান বিপ্লবী, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্নিসন্তান উল্লাসকর দত্তের ঐতিহাসিক এই বাড়িটির সামনে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করেছে বর্তমান কথিত মালিকপক্ষ। বাড়িটির উঠোনজুড়ে নির্মিত হচ্ছে সুবৃহৎ এক স্থাপনা। এই স্থাপনাটি নির্মিত হলে ঐতিহাসিক এই বাড়িটি ভবনের আড়ালে চলে যাবে এবং একসময় এর স্মৃতিচিহ্ন চিরতরে নষ্ট করে ফেলবে। ফলশ্রুতিতে নতুন প্রজন্ম এই বাড়িটি সম্পর্কে এবং এই বাড়ির বিপ্লবী ব্যক্তি সম্পর্কে জানা ও দেখা থেকে বঞ্চিত হবে। 

উল্লাসকর দত্ত

ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত। ১৮৮৫ সালের ১৬ এপ্রিল তদানীন্তন অবিভক্ত বাংলার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ গ্রামে তাঁর জন্ম হয়। তার পিতার নাম দ্বিজদাস দত্ত। উল্লাসকর দত্ত ১৯০৩ সালে এন্ট্রান্স পাস করে কলিকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। কলেজে পড়ার সময় ইংরেজ অধ্যাপক রাসেল বাঙালিদের সম্পর্কে কটূক্তি করার দরুণ উল্লাসকর দত্ত তাকে জুতাপেটা করেন। এজন্য উল্লাসকর দত্তকে কলেজ হতে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এই সময় থেকে তার জীবনে পরিবর্তন আসে। তিনি প্রখ্যাত বাঙালি বাগ্মী, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও লেখক বিপিন চন্দ্র পালের আগুনঝরা বক্তব্য শুনে অন্প্রুাণীত হন এবং দেশের পরাধীনতা, ইংরেজদের শোষণ, অত্যাচারে অসহ্য হয়ে বিপ্লবের পথে তিনি জীবনকে উৎসর্গ করেন। 

বিপিন চন্দ্র পালের অনুপ্রেরণাতেই উল্লাসকর দত্ত প্রথমে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন। পরে বিপ্লবী সংঘ ‘যুগান্তর’-এ যোগ দেন। তিনি বিস্ফোরক নির্মাণে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ৩০ এপ্রিল ১৯০৮ সালে প্রফুল্ল চাকী ও ক্ষুদিরাম বসু বিহারের মজফ্ফরপুরে বিচারক কিংসফোর্ডকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ইউরোপিয়ান ক্লাবের সামনে তাদের গাড়ীতে বোমা ছুড়ে মারেন। কিংসফোর্ড অন্য গাড়ীতে থাকায় বেঁচে যায়, কিন্তু সেই গাড়ীতে থাকা দুইজন ব্রিটিশ মহিলা ও গাড়ীর ড্রাইভার নিহত হন। বিপ্লবী হেমচন্দ্র দাস ও উল্লাসকর দত্তের তৈরি বোমাই ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকী ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে আক্রমণে ব্যবহার করেছিলেন। বোমা হামলার পর সারা বাংলায় ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়। এঘটনায় একটি মামলা হয়। যা আলিপুর বোমা হামলা মামলা নামে পরিচিত। 

১৯০৮ সালের ২মে গ্রেফতার হওয়ার পর উল্লাসকর দত্তসহ মোট ৩৭জন আলিপুর বোমা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হন। ৫ মে ১৯০৯ সালে ব্রিটিশ আদালতে বিপ্লবী বারীন ঘোষ ও উল্লাসকর দত্তকে ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে আপিলে ফাঁসির বদলে তিনি যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা পান। এসময় তিনি কালাপানি, আন্দামানের সেলুলার জেলে বন্দি ছিলেন। আন্দামানের কুখ্যাত সেলুলার জেলে উল্লাসকর দত্তকে শারীরিক নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়। এর ফলে তিনি সাময়িকভাবে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। ১২ বছর জেলে নির্মম অত্যাচারের শিকার হবার পর ১৯২০ সালে তাকে মুক্তি দেয়া হলে তিনি কলকাতা শহরে ফেরৎ আসেন। এসময় মামলায় হাজিরা দিতে তিনি বারবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসেন। উল্লাসকর দত্তকে ১৯৩১ সালে আবারও গ্রেফতার করা হয় এবং ১৮ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়। মুক্তিপর তিনি গ্রামেরটানে কালীকচ্ছে ফেরৎ আসেন এবং এখানে কয়েকবছর বসবাসের পর পুনরায় তিনি কলকাতা চলে যান। ১৯৪৭ এর ভারত বিভাগের পর তিনি গ্রামের বাড়ি কালীকচ্ছ চলে আসেন। এখানে ১০ বছর কাটানোর পর তিনি ১৯৫৭ সালে কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করেন। উল্লাসকর দত্ত তার শেষ জীবন আসামের শিলচরে কাটান এবং সেখানেই ১৯৬৫ সালের ১৭ই মে মৃত্যুবরণ করেন।

দ্বিজদাস দত্ত

উল্লাসকর দত্তের বাবা দ্বিজদাস দত্ত-ও একজন গুণী মানুষ ছিলেন। তিনি ১৮৫৪ সালে সরাইলের কালীকচ্ছ গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিাতার নাম গঙ্গাদাস দত্ত। দ্বিজদাস দত্ত যৌবনে ব্রাহ্মসমাজের প্রভাবাধীন হয়ে পিতার অমতে আনন্দ স্বামী কাছে ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেন এবং তার কন্যা মুক্তাকেশীকে বিবাহ করেন। দ্বিজদাস দত্ত কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ এর ছাত্র ছিলেন। দর্শণ শাস্ত্রে এম.এ পাশ করে সরকারি বৃত্তি নিয়ে কৃষির উপর উচ্চতর ডিগ্রী নিতে লল্ডন যান। দেশে ফিরে উন্নত প্রণালীতে কৃষিকাজ করতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে কলিকাতার বেথুন স্কুল ও চট্টগাম কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। পরে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কৃষি বিভাগের অধ্যাপকের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। এইখানে কর্তব্যরত অবস্থায় তার পুত্র উল্লাসকরের বিপ্লবী কর্মের জন্য সরকার তাকে অবসর নিতে বাধ্য করে। 

দ্বিজদাস দত্ত আজীবন স্বাধীনচেতা ও স্বদেশবৎসল ছিলেন। সংস্কৃত, আরবি, উর্দু ও ফার্সি ভাষায় তাঁর বুৎপত্তি ছিল। ১৩১৮ বঙ্গাব্দে পাট চাষ বিষয়ে উৎকৃষ্ট গ্রন্থ ‘পাট বা নালিতা’ রচনা করেন। তার রচিত অন্যান্য গ্রন্থ হলো: ‘শ্রীমৎ শঙ্করাচার্য ও শঙ্করদর্শন’ (২ খণ্ড), ‘বৈদিকধর্ম ও জাতিতত্ত্ব, ‘সর্বধর্মসমন্বয়’, ‘ইসলাম’, ‘বৈদিক সরস্বতী ও লক্ষ্মী’ প্রভৃতি। এছাড়াও তিনি গীতা, বাইবেল ও কোরানের অনুবাদ করেছিলেন। এই মহাপুরুষ ১৯৩৪ খ্রি. মৃত্যুবরণ করেন।

বাড়ি নিয়ে যেভাবে জটিলতা শুরু হয়

১৯৮৯ সালে উল্লাসকর দত্তের এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে ১ একর ৮০ শতাংশ জায়গার বাড়িটি কিনে নেন সূর্যকান্তি গ্রামের প্রয়াত হাফিজুর রহমান ও তার ভাই কালীকচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আহমেদুর রহমান। তাদের দাবি উল্লাসকর দত্তের কোন উত্তরাধিকারী না থাকায় তাঁর কোন এক জ্ঞাতী এই বাড়িটি তাদের দুই ভায়ের কাছে বিক্রী করেন। এর মধ্যে হাফিজুর রহমানের অংশে রয়েছে বিপ্লবী উল্লাস কর দত্তের জন্মভিটা। প্রয়াত হাফিজুর রহমানের এক ছেলে উল্লাসকর দত্তের মূল বাড়িটি আড়াল করে সম্প্রতি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য গর্ত করে ঢালাই কাজ শুরু করেছেন।

স্থানীয়দের দাবী জরাজীর্ণ এই বাড়িটি বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের সর্বশেষ স্মৃতি। ঐতিহাসিক এই বাড়ি ‘বাঘাবাড়ি’ হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। বাড়িটির সামনের অংশ বহুতল ভবন গড়ে উঠলে বিলীন হয়ে যেতে পারে অবিভক্ত ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসের অগ্নিগর্ভ, বাংলার অন্যতম বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের স্মৃতি। এই অগ্নিপুরুষের আত্মত্যাগের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে তার জন্মস্থান এই বাড়ির স্মৃতি সংরক্ষণ জরুরি বলে মনে করেন স্থানীয়রা। 

সামাজিক আন্দোলন

বাংলাদেশে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় বর্তমানে দেশের ৫২৪টি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি তালিকাভূক্ত থাকলেও সেই তালিকায় নেই কৃষিবিজ্ঞানী, পন্ডিত দ্বিজদাস দত্ত ও তাঁর পুত্র মহান বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের ১৫০ বছরের পুরনো এই বাড়ি। নানা সময়ে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর প্রায়ই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন বাড়িটি দেখতে আসেন। স্থানীয়রা মনে করেন, উল্লাসকর দত্তের বাড়ি সংরক্ষণের এখনই শেষ সময়। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে থাকলে এই বাড়িটি স্মৃতি সংরক্ষিত হবে। নতুন প্রজন্ম এর ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে। তারা বলেন, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে উল্লাসকর দত্তের যে অবদান সেই অবদানকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য দেড়শ বছরের এই পুরনো বাড়িটি সরকারের পক্ষ থেকে সংরক্ষণ করা হোক। এই বাড়িটি উদ্ধার করে সরাইল তথা বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষের গর্ব বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের স্মৃতি সংরক্ষণ করে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সচেতন জনগণ। 

বাড়িটিকে State Acquisition এর মাধ্যমে দ্রুত সংরক্ষণ এবং National Heritage ঘোষণার দাবীতে ‘ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ সংরক্ষণ পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ এই বাড়িটি রক্ষার দাবীতে সামাজিক আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীকচ্ছ, সরাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব চত্বরে পৃথক তিনটি মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ, গণস্বাক্ষর এবং জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। আন্দোলনের মুখে স্থানীয় প্রশাসন সাময়িকভাবে নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছেন। সম্প্রতি প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর এর কর্মকর্তা গ্রহণ বাড়িটি পরিদর্শন করেছেন। এবং এটি সংরক্ষণে উদ্যোগ নেয়া হবে বলে তারা জানান।

জেলার সর্বস্তরের লেখক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং এলাকাবাসী একাত্মতা হয়ে দ্রুততম সময়ে বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের বাড়িটি রক্ষার জোর দাবি জানান। তারা এই বাড়িটিকে অধিগ্রহণ পূর্বক প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় এটি সংরক্ষণ ও জাদুঘর নির্মাণের দাবি জানাচ্ছেন। অন্যথায় চলমান আন্দোলন আরো বেগবান করা হবে বলে তার জানান।

তথ্যসূত্র:
অশোক কুমার মুখোপাধ্যায় রচিত উল্লাসকর দত্তের ইতিহাস ও জীবনমূলক গ্রন্থ ‘অগ্নিপুরুষ’। 
উইকিপিডিয়া বাংলা, এবংলাইব্রেরিডটকম, স্যাটেলাইট চ্যানেল, জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম।


কৃতজ্ঞতা: 
জয়দুল হোসেন, সভাপতি-সাহিত্য একাডেমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। 
জহিরুল ইসলাম স্বপন, সভাপতি-উদীচী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা।
আমির হোসেন, সভাপতি-চেতনায় স্বদেশ গণগ্রন্থাগার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। 
ফেরদৌস রহমান, সাধারণ সম্পাদক-উদীচী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ