Ticker

6/recent/ticker-posts

পত্রিকা, স্মরণিকা বা ওয়েবসাইটে লেখা পাঠানোর সাধারণ নিয়মাবলী

বিভিন্ন পত্রিকা, স্মরণিকা বা ওয়েবসাইটে লেখা পাঠানোর সাধারণ নিয়মাবলী

মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ

আমরা অনেকেই বিভিন্ন ছাপা পত্রিকা বা স্মরণিকায় লেখা পাঠাই। কিন্তু লেখা পাঠানোর সাধারণ নিয়মাবলী অনুসরণ করি না। তাই সম্পাদক বা প্রকাশনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ লেখা প্রকাশে বা সম্পাদনা করতে যথেষ্ট সমস্যায় পড়েন। তাই ইচ্ছে থাকা সত্বেও অনেক ভালো লেখা প্রকাশ করা সম্ভব হয় না।

যেমন অনেক সময় ফাইল ওপেন কার যায় না। অনেক লেখা নতুন করে টাইপ করতে হয়। অনেকের সময় যুক্তবর্ণ ভেঙ্গে যায়। লাইন, প্যারা মিল থাকে না। এমকি শব্দ, বাক্য পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলে লেখাটি তার কাঙ্খিত মান ও মযার্দা হারায়।

কাজেই নিয়মিত যারা লেখালেখি করেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে লেখা পাঠাতে চান, তারা লেখা পাঠানোর বেসিক নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিবেন। অবশ্য অনেকের কিছু আলাদা আলাদা বা স্বতন্ত্র নিয়মও থাকে। সেসব ভালোভাবে জেনেই লেখা পাঠানো উচিৎ।


নিচে জেনে নিন লেখা পাঠানোর কিছু সাধারণ নিয়মাবলী।


* নিজের মৌলিক ও অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। নিজের পূর্বে প্রকাশিত বা অন্যকারো লেখা নিজ নামে পাঠানো যাবে না। এখন সহজেই লেখা চুরি ধরা যায়। একবার অন্যের লেখা পাঠালে, দ্বিতীয়বার আপনার মৌলিক লেখাও ছাপাতে পারবেন না।

* মেসেঞ্জার বা ওয়ার্টসঅ্যাপ-এ লেখা পাঠানো যাবে না। এটি সাধারণ যোগাযোগ মাধ্যম। একজন ব্যক্তি প্রতিদিন অংশ মানুষের সাথে এগুলি ব্যবহার করে যোগোযোগ  করে থাকেন। মেসেঞ্জার বা ওয়ার্টসঅ্যাপ-এ  লেখা পাঠালে অনেক চ্যাটিং এর ভীরে সেটি হারিয়ে যেতে পারে। এমনকি আপনি নিজেও যদি তার সাথে (যার কাছে লেখা পাঠিয়েছেন) নিয়মিত যোগাযোগ করে থাকেন ১৫/২০দিন পর অনেক কথার ভীরে সেটি পিছনে পড়ে যাবে। তাছাড়া মেসেঞ্জার বা ওয়ার্টসঅ্যাপ-এর লেখা কনভার্ট করতে হয় বা আবার টাইপ করতে হয়। যা একজন সম্পাদকের জন্য অতিরিক্ত কাজ।

* ই-মেইলে লেখা পাঠাতে হবে। কিন্তু ই-মেইলের টেক্স বডিতে লেখা যাবে না। ফাইল আলাদা ভাবে এটাচ করে পাঠাতে হবে। আপনার নিজেরও একটি ই-মেইল থাকা বাঞ্চনীয়। অন্যের ই-মেইল ব্যবহার করা ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক নয়।

* Mail এর Subject Line এ অবশ্যই কোন বিষয় বা সংখ্যা তা উল্লেখ করবেন।

* লেখাটি কম্পিউটার বা ল্যপটপে কম্পোজ করে পাঠাতে হবে। নিজের কম্পিউটার না থাকলে কোন দোকান বা অন্য কারো সহযোগিতা নেয়ার চেষ্টা করুন। শুধু মোবাইল ব্যবহার করে লেখালেখি করলে আপনি কখনোই ভালো লেখক হতে পারবেন না।

* কম্পোজ করার ক্ষেত্রে কি বোর্ড ভার্সন বিজয় ৫২ এর সুতন্বী এমজে (Sutonny MJ) ফন্টে লিখতে হবে। (এটি সর্বজনীন স্মার্ট এবং অফিসিয়াল ফ্রন্ট। সবাই এটি ব্যবহার করে, তাই কোন ঝামেলা নেই। শব্দ ভেঙ্গে যাওয়ারও সমস্যা থাকে না।

* লেখাটি MICROSOFT WORD DOCUMENT 1997- 2003 ফরমেটে  সেভ করতে হবে। এই ফরম্যটে ফাইল সেভ না করলে অনেক কম্পেউটারে ফাইল ওপেন হয় না।


* ফন্ট সাইজঃ ১৪, হেডিং/সাব হেডিং ১৬/১৮, ফ্রন্ট স্টাইল রেগুলার, জাস্টিফাই, লাইন স্পেসঃ ১.৫ অথবা Single করে দিলে ভালো হয়।

* কোন ওয়েব সাইট ও অনলাইন মাধ্যমে লেখা পাঠোনোর জন্য যে কোন ইনিকোড ভার্সনে লেখা পাঠাবেন। সে ক্ষেত্রে Vrinda অথবা TonnyBanglaOMJ ফ্রন্টটি বেশ স্মার্ট ও সর্বজনীন। ইনিকোডে লিখলে ফন্ট সাইজঃ ১২/১৩ সাইজে লেখা পাঠাবেন।

* বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রমিত বানান রীতি অনুসরণ করে লিখবেন। বানান বেশি ভুল হলে লেখা অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়।

* আপনার লেখাটি সম্পাদনা পরিষদ কর্তৃক মনোনীত হলে তা ছাপা হবে। লেখা ছাপানোর জন্য অনুরোধ গ্রহণযোগ্য নয়। অথবা লেখা পাঠানোর পর মনোনীত হয়েছে কি’না, ছাপা হয়েছে কি’না বা কবে ছাপা হবে ইত্যাদি প্রশ্ন করা করা সমিচিন নয়। ছাপা হলে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে। অথবা প্রকাশিত সংখ্যা পাঠানো হবে।

প্রিয় পাঠক উল্লেখিত নিয়মগুলি খুব কঠিন কিছু নয় দু-একবার প্রক্টিস করলে আপনি নিজেই বুজতে পারবেন। সুতরাং নিয়ম মেনে লেখা পাঠান আর ভালো লেখক হয়ে যান। 

লেখা হোক আপনার নিত্য সঙ্গী 

লেখা হোক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার।


শুভ কামনাসহ

মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ

২৬ আগস্ট ২০২২ খ্রি.

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ