কবিতা মানুষের কথা বলে, বলে জীব ও জড়ের কথা । কবিতা
আশা-নিরাশার কথা বলে, বলে স্বপ্ন ও সম্ভাবনার কথা। কবির বর্ণনা না থাকলে প্রকৃতিও আমাদের
কাছে এত সুন্দর লাগতো না। দেশপ্রেম ও ভাষার কথা আমরা কবিতা থেকেই জানি-শিখি। কবিতা
মানবতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও সহিষ্ণুতার বার্তা ছড়ায়।
কবিতা ভালোবাসার কথা বলে, বলে বিরহ-বিচ্ছেদের কথা। প্রথম প্রতিবাদ-প্রতিরোধ কবিতা থেকেই আসে। কবিতা মানুষের মনের ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়। কবিতা মানুষকে হাসতে শেখায়, কাঁদতে শেখায়, আনন্দে ভাসতে শেখায়।
কবি তার নিজের দেখা, শেখা, যাপন ও উপলব্ধি করা
জীবনকে শব্দ-বাক্যর যুগলবন্দির নান্দনিক উপস্থাপনায় পাঠকের মনের আয়নার সামনে প্রতিস্থাপন
করে। কিছুটা কল্পনা, কিছুটা বাস্তবতার মিশেলে কবিতা অনবদ্য পাচন তৈরি হয়ে মানুষের
হৃদয়ের হিংসা-বিদ্বেষ, কালিমা ও হতাশাকে দূর করে দেয়।
যে কবিতার এত বৈচিত্র্য, যে কবিতা এত পরশ পাথরীয় গুণ- সেই কবিতা যখন শিল্পীর কণ্ঠে সুর, তাল, ছন্দের উঠানামায় দুলতে থাকে- তখন সেই কবিতা যাদু মন্ত্রের শ্রোতার শরীর ও মনে মায়াবী প্রভাব বিস্তার করে। সে কবিতা আরো বেশি জীবনমুখী ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
বস্তুতো কবিতা কামরূপ-কামাখ্যার যাদু মন্ত্র কিংবা আলফ্রেড নোবেলের ডায়নামাইটের চেয়েও কম শক্তিশালী নয়। কোনো কোনো কবিতা পারমাণবিক বোমার চাইতেও শক্তিশালী।সমাজ, রাষ্ট্র আর মানুষের মন পরিবর্তনের যে শক্তি কবিতায় আছে- সে শক্তি পৃথিবীর আর কোনো অস্ত্রের নেই।
যে কবিতা ভালোবাসে না, সে মানুষকে ভালোবাসে না। যে কবিতা ভালোবাসে না- সে জীবনকেও ভালোবাসে না। আর যে কবিতা ভালোবাসে, সে হয় সবচেয়ে নান্দনিক মানুষ, মানবিক মানুষ।
আগামীকাল ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে সম্প্রীতির আবৃত্তিসন্ধ্যা। প্রিয় সংগঠন তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বছরব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে দ্বিতীয় পর্বের এ বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভারতের আবৃত্তিশিল্পী অংশগ্রহণ করবেন ।
আসুন আবৃত্তি শুনি। সুরোলিত কণ্ঠের ঝরনা ধারায় এই গরমে শরম ভুলে- অন্তর শীতল করে কবিতার শব্দ, সুর ও ছন্দে।
কবিতা কথন
মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ
২১ এপ্রিল ২৪
0 মন্তব্যসমূহ