Ticker

6/recent/ticker-posts

নঈম উদ্দিন স্যার, পর্দা ও আমাদের সমাজ বাস্তবতা


ছোট্ট একটি গল্প দিয়ে লেখাটি শুরু করা যাক আজকের মূল লেখা এবং মূল ঘটনার সঙ্গে যেই গল্পের মিশ্রতা রয়েছে প্রায় ১৫-১৬ বছর আগের কথা তখন আমি সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র কলেজ ক্যাম্পাসে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম ক্যাম্পাসে তখন অনেক নীরবতা বিরাজ করছে! ডিগ্রি ক্লাসগুলোর সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় একটি শ্রেণি কক্ষকে বেশি নীরব বলে মনে হলো পাশে থাকা কলেজের এক কর্মচারীকে জিজ্ঞেস করলাম- ভাই, অন্যান্য রুম থেকে টুকটাক আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে এই কক্ষটি এত নীরব কেন ? তিনি জানালেন- এখানে পরীক্ষা চলছে নঈম উদ্দিন স্যারের  ডিউটি পড়েছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ দেশের পুরাতন  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি এই কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের একজন শিক্ষক, শ্রদ্ধেয় নঈম উদ্দিন নঈম স্যার একটি বিষযয়ের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী পরিচিত ছিল নঈম উদ্দিন স্যার অত্যন্ত কড়া মেজাজের শিক্ষক তাঁর পরীক্ষার ডিউটি পড়লে কোনো ছাত্রছাত্রী নকল করা তো দূরের কথা ঘাড় বেঁকে একজন আরেকজনের দিকে তাকানো যায় না কথা বলাতো অনেক পরের বিষয় স্যারের চোখে পড়লেই স্যার হয়তো দাঁড় করিয়ে রাখবেন অথবা ২০-৩০ মিনিটের জন্য খাতা রেখে দেবেন নকল করে ধরা পড়লে একদম এক্সফেল সহশিক্ষকরাও তখন সুপারিশ করে কিছু করতে পারেন না এইজন্য আড়ালে আবডালে ছাত্রছাত্রীরা যে স্যারকে একটু আধটু বকাবকি করে তাও ঠিক তবে স্যারের সামনাসামনি কেউ বেয়াদবি করার সাহস পায় না

যে সাবজেক্টগুলো মোটামুটি কঠিন অথবা যে পরীক্ষার্থী ঠিকমতো প্রস্তুতি নিয়ে আসতে পারেনি, সেসব পরীক্ষার্থীর দোয়া থাকে আজকে পরীক্ষার হলে যেন নঈম উদ্দিন স্যারের ডিউটি না পরুক স্যারের এই বিষয়গুলোর সঙ্গে সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা সকলেই অবগত ছিল বিধায় অন্তত নঈম উদ্দিন স্যারের খপ্পরে না পড়ার জন্য হলেও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়া তৈরি করে আসে পরীক্ষার হলে মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়ে আসে

আমরা ভালো বলি বা মন্দ বলি এই একটি বিষয় ছাড়া স্যারের সমালোচনা করার মত এমন কিছু নেই তিনি একজন ভালো শিক্ষক একজন আদর্শ শিক্ষক নীতিবান শিক্ষক বলেই সবাই জানে অযথা  শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন না তিনি শিক্ষার্থীরা অবশ্য দুর্ব্যবহারের সুযোগও পায় না কারণ স্যারকে দেখলেই অনেকে আগে থেকেই একটু দূরে সরে যায়  নঈম উদ্দিন স্যারও ক্যাম্পাসে তর্জন গর্জন করে চলা শিক্ষক নন

যে আলোচনাটি ফেসবুকে ভাইরাল যে, স্যার পর্দা বিরোধী বা ইসলাম বিরোধী কোনো মানুষ একজন শিক্ষার্থীর ফেসবুক স্ট্যাটাসে করা একটি  অভিযোগের মাধ্যমে সবাই এই বিষয় নিয়ে সবাই আলোচনায়-সমালোচনায় মুখর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত লম্বা সময় লেখাপড়া করেছি কলেজে না গেলেও এখনও কলেজের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়নি শিক্ষক ছাত্রছাত্রী এবং সরকারি কলেজের অনেক কর্মচারীর সঙ্গেও আমার সুসম্পর্ক রয়েছে এই সময়ের মধ্যে কথা আমি নিশ্চিন্তে বলতে পারি যে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে অনেক মুসলিম শিক্ষক রয়েছেন, অমুসলিম শিক্ষক রয়েছেন কিন্তু একজনও নাস্তিক বা ধর্ম বিরুদ্ধ কোনো শিক্ষক নেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের প্রতিটি শিক্ষক আলোকিত মানুষ আদর্শবান শিক্ষক অতীত থেকে বর্তমান এই কলেজের হাজার হাজার শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সুনামের সঙ্গে নিজেদের কর্মজীবন পার করছেন

আমাতুল্লা জান্নাতুল বাকেয়া নামের মেয়েটি ফেসবুকে যে পোস্ট করেছেন, পোস্টটি প্রথমেই আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে পোস্টটি পড়ে মনে হয়েছে মেয়েটি যতটা না ধার্মিক, তার থেকেও বেশি আবেগি বানান ভুল আর দাড়ি কমার ব্যবহার কথা না হয় বাদই দিলাম তার অভিযোগটি পড়ে ঘটনাটি বোঝার চেষ্টা করেছি, অনুমান করার চেষ্টা করেছি, সেখানে কী ঘটতে পারে প্রথমে যেই ছোট্ট একটি গল্পের কথা বলেছিলাম তার সঙ্গে এই ঘটনার যোগসূত্র পাওয়া যায়

মেয়েটির মুখোশ পরে পরীক্ষা দিতে এসেছিল কোনো একজন শিক্ষক তাকে মুখোশ খুলে পরীক্ষা দিতে বলে যেহেতু একজনের পরীক্ষা আরেকজন দেয়ার প্রচুর উদাহরণ বাংলাদেশে আছে সে ক্ষেত্রে এই কথাটি বলতে যাওয়া কোনো শিক্ষকের জন্য অমূলক নয় মেয়েটি তার পর্দার পালনের কথা উল্লেখ করে একজন মহিলা শিক্ষকের সামনে নিজের  মুখোশ খোলার কথা বলে কিন্তু ইতিপূর্বে বিষয়টি নিয়ে একটু হট্টগোল তৈরি হয় উপস্থিত শিক্ষকরা এই মেয়েটিকে প্রকৃত ছাত্রী কিনা এই বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করে ফলে

ঘটনাচক্র সেখানে অবস্থান করেছিলেন নঈম উদ্দিন স্যার তিনি তার চিরায়ত স্বভাব অনুযায়ী মেয়েটিকে মুখোশ খোলার জন্য বলে স্যার যেহেতু রাগী মানুষ, তাই রাগত স্বরে কথাগুলো বলেছেন এটাই অনুমান করছি এটিতে পর্দার বিষয় সম্ভবত স্যার বা উপস্থিত অন্যরা কেউ গুরুত্বসহকারে ভাবেননি ফলে একরকম একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে আবেগি হয়ে এই মেয়েটি ফেসবুকে স্যারের বিরুদ্ধে একটি পোস্ট দিয়েছে

ফেসবুকে এমন একটি মাধ্যম, যেখানে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ থাকে এখানে জ্ঞানী গুণী বিজ্ঞ লোকের সংখ্যা যেমন আছে তেমনি প্রচুর পরিমাণে নির্বোধ, মূর্খ আবেগি টাইপের লোকও আছে বরং ধরনের লোকের সংখ্যাই বেশি সহজকে সহজ ভাবে নেওয়া, কঠিনকে সহজ ভাবে নেওয়া, কোনো ঘটনার অদ্য প্রান্তে যাওয়া ভালো-মন্দ বিচার করার শক্তি সবার সমান থাকে না তার উপরে রাজনৈতিক বা ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয়ে  চট করে একটা পক্ষ ধারণ করে নেয় নিজের মতাদর্শের বিপক্ষে আছে এমন গন্ধ পেলেই সত্য-মিথ্যা, ভালো-মন্দ যাচাই না করেই সবাই তার পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে নেন

জান্নাতুল এই বিষয়ে আরেকটু সংযমী বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ করতে পারত প্রথমত সে যেহেতু পর্দাই করতে চাচ্ছে সে তার মহিলা পরীক্ষকের কাছে মুখ খুলবেন এই বিষয়টি আরো জোড়ালো ভাবে বলা উচিত ছিল তারপর ঘটনা যেহেতু একটি ঘটে গেছে পরবর্তী নিজ বিভাগ অথবা কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও করতে পারত তা না করে ফেসবুকের মতো একটি জায়গায় এরকম স্পর্শ কাতর বিষয় উল্লেখ করা তার মোটেও উচিত হয়নি বিশেষত বিষয়টি যখন ধর্মের সংশ্লিষ্ট  হলেও ধর্ম বিরুদ্ধে নয়

জান্নাতুল মাওয়া বাকেয়াকে বলবো: বোন তুমি কি জানো পর্দার ব্যাপারে আমাদের ধর্মে কি বলা হয়েছে প্রথমত বিশেষ প্রয়োজনে মুখমণ্ডল খোলা রাখা, দুই হাতের কব্জি এবং পায়ের খোলা রাখা নারীদের জন্য ইসলামি বিধানে জায়েজ রয়েছে তবে হ্যাঁ সারা বিশ্বের ওলামায়ে কেরাম মুখমণ্ডল ঢাকাকে পর্দা বলে বলে ঘোষণা করেছেন তবে তা ইসলামের মূল বিধান নয় প্রয়োজনীয় সময়ে এইটুকু পর্দা খোলায় যায়

আমরা জানি হজ করার সময়, জাতীয় পরিচয় পত্র করার সময় ছবি তোলা নাজায়েজ নয় আচ্ছা বোন- তুমি কি জানো বর্তমানে নারী শিক্ষায় অনেক অগ্রতি লাভ করেছে দেশে অনেক নারী শিক্ষক এবং চিকিৎসক রয়েছে কিন্তু একসময় যখন নারীরা শিক্ষার দিকে পিছিয়ে ছিল তখন এই নারীরা চিকিৎসা সেবা নিতে কোন পুরুষের দ্বারস্থাই হতে হত আগের যুগের নারীরা কিন্তু যথেষ্ট পর্দা মেনে চলতো কিন্তু প্রয়োজনে তারা এসব পর পুরুষের সামনে যেতেন সেটা নিশ্চয়ই পর্দার খেলাপ ছিল না

বোন জান্নাতুল তুমি পর্দা করতে চাচ্ছ ভালো কথা পরীক্ষার হলে শনাক্তকরণ করা হবে, এমনটা তোমার আগেই বোঝা উচিত ছিল এবং উপস্থিত নারী শিক্ষক অথবা কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে পূর্ব থেকে জানিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন ছিল এসব যেহেতু তুমি করোনি, তাই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেছে এটা ফেসবুকে পোস্ট না দিয়েও তুমি অন্য ভাবে বিষয়টি হ্যান্ডেলিং করতে পারতে তুমি নঈম উদ্দিন  স্যার  সম্পর্কে অন্য কিছু না জেনেই পোস্ট করেছো

ফেসবুকে আরেকটি মেয়ের কমেন্ট ভেসে বেড়াচ্ছে যে মেয়েটির তোমার সাথেই হলরুমে ছিল সে বলছে পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৪০ মিনিট আগের ঘটনা এটি তার আগের প্রায় তিন ঘণ্টা বিশ মিনিট তুমি মুখ ঢেকে পরীক্ষা দিয়েছো কর্তব্যরত নারী পরীক্ষক তোমাকে বারবার বলার পরেও তুমি মুখোশ খোলোনি পরে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শক নঈম উদ্দিন স্যার হল পরিদর্শন করতে আসলে, বারবার বলার পরেও তোমার মুখোশ না খোলার বিষয়টি তিনি জানতে পারেন ফলে অন্যদের মতো তিনিও সন্দেহ করেন তুমি সত্যিকার পরীক্ষার্থী কি না তাই মুখোশ খুলতে বাধ্য করা হয় এমনটা হলে আমি বলব- দোষতো তাহলে তোমারই ছিল

বোন- তুমি কি বুঝতে পারছ তোমার একটি মাত্র পোস্ট স্যারের সমগ্র শিক্ষকতা জীবনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে তুমি কি বুঝতে পারছ- তোমার একটি পোস্ট আমাদের প্রিয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দেশের মানুষের কাছে একটি নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করছে তোমার একটি পোস্ট নঈম উদ্দিন এবং তার পরিবারের সদস্যদের জীবনকে অনিশ্চয়তায় ফেলতে পারে- তা কি বুজতে পারো ? তোমার জন্য সব পর্দা যেমন প্রয়োজনীয় বিষয় স্যারের জন্য নিজের শিক্ষকতা জীবন, চাকুরি জীবন এবং ফ্যামিলি লাইফ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ তুমি কি এসব ঝুঁকির মধ্যে ফেলছো না !

আচ্ছা জান্নাত- তুমি নিশ্চয়ই স্মার্টফোন ব্যবহার করো তুমি তো দেখো স্মার্টফোনে কত আলেম-ওলামার ছবি ভিডিও ওয়াজ প্রচার হয় তুমি কি জানো, মাত্র ২০ বছর আগে এসব সম্পূর্ণরূপে হারাম ছিল এখন তাহলে হারাম নয় কেন ? হারাম হলে তারা এগুলো কাজ করছে কেন ? এর একটি সহজ উত্তর- সময়ের প্রয়োজন সময়ের প্রয়োজন এবং ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী কোনো বিষয়ের নীতিমালা পরিবর্তন হয়, হতে পারে

সময়ের দাবি ছিল সকল ঝামেলা হারানোর জন্য তোমার মুখোশ খোলা হয়তো নারী শিক্ষকের কাছে নয়তো পুরুষ শিক্ষকের কাছেই কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীর শনাক্ত করা অবশ্যই প্রয়োজনীয় বিষয় জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের নির্দেশনাও এমন এটা না হলে তোমাদের মত পর্দা করা মেয়েদের সুযোগ নিয়ে অনেক গাধা, অছাত্রীরা নিজেদের শিক্ষিকা, ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে সার্টিফিকেট নিয়ে বের হবে তারা সেবা দেবে আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের এবং  একসময় এই সমস্ত গণ্ডমূর্খ শিক্ষিকা বা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়াররা সমস্যায় ফেলবে দেশের হাজার হাজার মানুষকে কাজেই তুমি সময়ের দাবি কেউ উপেক্ষা করেছো ফলে একটি ঝামেলা তৈরি হয়েছে

বোন- বর্তমানে আমরা এমন একটা সময়ের মধ্যে বসবাস করি যেখানে একটা জেনারেশন তৈরি হচ্ছে বেয়াদব টাইপের যারা মুরুব্বি মানে না শিক্ষক বা গুরুজন মানে না এই তো মাসেই পরীক্ষার হলে ডিউটির সময় এক ছাত্র শিক্ষকের গালে চড় মারল গত বছর এক ছাত্র স্ট্যাম্প দিয়ে শিক্ষককে হত্যা করলো তার আগের বছর এক শিক্ষকের গলায় ছাত্ররা জুতার মালা পরিয়ে দিল আরেক শিক্ষককে জেলে যেতে হল এই সমস্ত ঘটনা এই দেশে অহরহ ঘটছে ফলে এসব নিয়ে যখন ফেসবুকে আলোচনা উঠে তখন সবাই একটি কথাই বলে যে শিক্ষকদের হাতে আবার বেত তুলে দেওয়া উচিত বেত হয়তো শিক্ষকদের হাতে আর উঠবে না কিন্তু একটি আদর্শ ছাত্রসমাজ আদর্শ একটি জেনারেশন গড়ে তুলতে হলে সঈম উদ্দিন স্যারের মতো শিক্ষকদের আরো বেশি করে প্রয়োজন

নঈম উদ্দিন স্যার মেজাজে কড়া| স্বভাবে ভালো মানুষ| একজন আদর্শ শিক্ষক| নঈম উদ্দিন  স্যারের মতো শিক্ষক প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অন্তত একজন করে থাকা দরকার|

লেখা অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে, শেষ করছি পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত একটি হাদিস দিয়ে একেকজন আলেম একেকভাবে এর ব্যাখ্যা দিবেন কোনটি গ্রহণ করবে সেটি তোমার দায়িত্ব

আর হে নবী! মুমিন মহিলাদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানগুলোর হেফাজত করে আর তাদের সাজসজ্জা না দেখায়, যা নিজে নিজে প্রকাশ হয়ে যায় তা ছাড়া৷ আর তারা যেন তাদের ওড়নার আঁচল দিয়ে তাদের বুক ঢেকে রাখে৷ তারা যেন তাদের সাজসজ্জা প্রকাশ না করে, তবে নিম্নোক্তদের সামনে ছাড়া স্বামী, বাপ, স্বামীর বাপ, নিজের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে, নিজের মেলামেশার মেয়েদের, নিজের মালিকানাধীনদের, অধীনস্থ পুরুষদের যাদের অন্য কোনো রকম উদ্দেশ্য নেই এবং এমন শিশুদের সামনে যারা মেয়েদের গোপন বিষয় সম্পর্কে এখনো অজ্ঞ৷ তারা যেন নিজেদের যে সৌন্দর্য তারা লুকিয়ে রেখেছে তা লোকদের সামনে প্রকাশ করে দেবার উদ্দেশ্য সজোরে পদক্ষেপ না করে৷ হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর কাছে তওবা করো, আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে৷(সূরা আন নূর আয়াত নং ৩১)

হজরত বুরাইদাহ বর্ণনা করেছেন, নবী (সা) হজরত আলীকে (রা) বলেন, "হে আলী! এক নজরের পর দ্বিতীয় নজর দিয়ো না প্রথম নজর তো ক্ষমাপ্রাপ্ত কিন্তু দ্বিতীয় নজরের ক্ষমা নেই (আহমাদ,তিরমিযী, আবু দাউদ, দারেমী)

বিশেষ দ্রষ্টব্য: ব্যক্তিগতভাবে আমি অশ্লীল অবাঞ্ছনীয় পোশাক না হলে যেকোনো মানুষের পোশাকের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী তাই যে সমস্ত নারী শিক্ষার্থী কর্মীরা বোরকা হিজাব পড়ে লেখাপড়া বা চাকরি করতে চায়, তাদের জন্য কর্মস্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরীক্ষার হলে ফিঙ্গারিং পদ্ধতিতে পরীক্ষার্থী শনাক্তের শিক্ষার্থীর দাবি জানাই

 

নঈম উদ্দিন স্যার, পর্দা আমাদের সমাজ বাস্তবতা

মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ

১৮ অক্টোবর ২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়া


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ