Ticker

6/recent/ticker-posts

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন অধ্যাপক একেএম হারুনুর রশীদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন অধ্যাপক একেএম হারুনুর রশীদ স্যার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিক্ষা-শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে রয়েছে তাঁর রয়েছে বিশাল আবদান তিনি একাধারে একজন কবি, গীতিকার, সুরকার, নাট্যনির্মাতা নাট্য অভিনেতা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অসংখ্য কবি, শিল্পী, নাট্যাভিনেতা হারুন স্যারের হাতে গড়াহারুণ স্যারের লেখা অসংখ্য কবিতা, গান নাটক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহিত্য-সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে

ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক১৯৭১ সালের ব্রাহ্মণবাড়িয়া একমাত্র অস্থায়ী বেতার কেন্দ্র পরিচালনা করেছিলেন তিনি সেজন্য তাঁকে একাত্তরের এক শব্দসৈনিক বলা হয়ে থাকে

তিনি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের  অধ্যাপক এবং শেষ জীবনে ছিলেন লায়ন ফিরোজুর রহমান রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ২০০৬ সালের ৮ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। রত্নগর্ভা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতি ব্যক্তিত্ব হারুন স্যারের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাচ্ছি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি আমিন

অধ্যাপক একেএম হারুনুর রশীদ স্যারের স্মৃতি ও সকল সৃষ্টিকর্ম সংরক্ষণসহ নতুন প্রজম্মের কাছে ছড়িয়ে দেয়ার উদাত্ব আহবান জানাচ্ছি।


বিঃ দ্রঃ কয়েক বছর আগে আবৃত্তিশিল্পী ও সংগঠক বাছির দুলাল ভাই হারুণ স্যারকে নিযে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। হারুণ স্যার সম্পের্কে যারা আরো একটু বেশি জানতে চান্, তাদের জন্য দুলাল সেই লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো।


'এ দেশটাকে ভালোবেসে
মরতে যদি গো পারি
মরণের পর বলবো হেসে
তিতাস পাড়ে আমার বাড়ি।'


কথাগুলো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার। যিনি একাধারে  একজন শিক্ষক, লেখক, গীতিকার, সুরকার, নাট্যকার সর্বোপরি আপাদমস্তক একজন দক্ষ সংগঠক। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টাতেই দেশময় প্রতিকূল অবস্থাতেও যাত্রা শুরু করে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শাখা। সেটা ১৯৮৮ সালে। ছিলেন জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।

৭১-এর উত্তাল সময়ে প্রিয় কলম গুটিয়ে তুলে নিয়েছিলেন রাইফেল। দায়িত্ব পালন করেছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন সফল সংগঠক হিসেবেও। দেশ স্বাধীনের পর আবার ফিরে আসেন নিজের কর্মজগতে। বিছিয়ে দেন ভাবনার সুদূরপ্রসারী পাখা। নিজস্ব সৃজনশীলতা, স্বকীয়তা ধরে রেখে আজীবন নিজস্ব স্ট্যান্ডার্ডে অনড় ছিলেন। মাটির সাথে, শিকড়ের সাথে থাকা সুগভীর টান তিনি কখনোই উপেক্ষা করতে পারবেন না বুঝেছিলেন হয়তো। তাই প্রিয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেড়ে কোথাও জান নি অজস্র সুযোগ থাকার পরেও।

শ্রদ্ধেয় একেএম হারুনুর রশীদ ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধকালীন সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি বেতার কেন্দ্র তিনি পরিচালনা করেছিলেন, তিনি ছিলেন ছাত্রদের প্রিয় শিক্ষক, সংস্কৃতিসেবীদের অনন্য অভিভাবক, শিশু সংগঠক অসাধারণ প্রতিভার একজন কবি লেখক নাট্যকার শিল্পী।

অন্যদিকে উনার স্ত্রী দিলারা হারুন ছিলেন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, সংস্কৃতিসেবী, যন্ত্র শিল্পী, নারী অধিকার আদায়ে রাজপথের লড়াকু নেত্রী, কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের নেত্রী, সমবায় আন্দোলনের পথিকৃৎ, একজন মমতাময়ী শিশু সংগঠক। এইযুগলের বাড়িটি মৌলভীপাড়ার কবিতাঙ্গন হারিয়ে গেছে প্রায়। তাঁদের স্মৃতি নতুন প্রজন্ম জানার মতো কোন নিদর্শনও নেই।

স্ত্রী দিলারা হারুনও ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা।১৯৯৬-০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপিও হয়েছিলেন।ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিও।এতো বাঘা বাঘা সব পদে থেকেও এই যুগলের চালচলন ছিলো নিতান্তই অনাড়ম্বর।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার_হিরন্ময়_যুগল বলে ডাকা হয় হারুন-দিলারা যুগলকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘটে যাওয়া যে সাংস্কৃতিক বিপ্লব সেই বিপ্লবের অগ্রনায়ক হিসেবে হারুনুর রশীদ-দিলারা হারুন দম্পতির নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। স্যার চলে গেছেন আজ ১৪ বছর। তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রীও চলে গেছেন ২০১২ সালে। তাঁদের স্মৃতি রক্ষায় তেমন কোনো প্রয়াস ইতিপূর্বে না থাকলেও বর্তমানে জেলা শিল্পকলা একাডেমির তত্ত্বাবধানে কাজ চলছে। (সংকলিত)।

 মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ

প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক

ঝিলমিল একাডেমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ