Ticker

6/recent/ticker-posts

তিতাস পাড়ে সাহিত্য আড্ডা

সাহিত্য আড্ডার ভিন্নরকম একটি আবেদন থাকে। নিজেকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি নতুন নতুন সাহিত্য সৃষ্টির জন্য এরকম আড্ডার ভূমিকা অপরিসীম।দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত সকল লেখক, কবি, সাহিত্যিকগণ কোনো-কোনো আড্ডার মাধ্যমেই নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করেছেন।



সাহিত্য আড্ডায় অংশ গ্রহণকারি প্রায় সবাই বক্তা, সবাই শ্রোতা। তাই দীর্ঘক্ষণ শুনলেও বিরক্ত লাগে না। শেখা যায় অনেক কিছু। এধরনের আড্ডার জন্য, ভেন্যু, মঞ্চ, আসন, ব্যানার বা সাউন্ড সিস্টেম লাগে না। এখানে অতিথিবৃন্দের অথাকথিত প্রটোকলের ঝামেলা নেই। বেশি লোকবলের প্রয়োজন হয় না।

ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে এখন কয়েকটি সংগঠন মাঝে মাঝে এরকম সাহিত্য আড্ডার আয়োজন করে থাকে। আমার চেষ্টা থাকে সেগুলোতে উপস্থিত হওয়ার। আর সেটা যদি হয় উম্মুক্ত প্রান্তরে, তাহলে-তো সোনায় সোহাগা।


আমাদের এবারের সাহিত্য-আড্ডা ছিলো তিতাস নদী পাড়ি দিয়ে, আঁকা বাঁকা, উচু-নিচু পথ মাড়িয়ে লইস্কারবিলের গুছাকান্দি নামক এক গোচারণ ভূমিতে।

সেখানে মাথার উপর উম্মুক্ত বিশাল আকাশ, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়ানো পাখি। দুপাশে অবারিত জমিন, জমি, নদী-খাল, ডোবা। দলে দলে ঘাস খেতে থাকা গবাদি পশু, বুক পানিতে নেমে ঘরে ফেরা গরু-মহিষের দল। দলছুট বাধ্যগত এক ভদ্র কুকুর।



দূর দিগন্তের এক পাশে সবুজ শ্যামল গ্রামের হাতছানি। বিপরীত পাশে ফেলে আসা শহরের ব্যস্ততা, কোলাহল। রঙিন আলোয় ঝলসানো স্বপ্নিল নেশা। সব মিলিয়ে যেন এক নৈস্বর্গীক পরিবেশ। সেথায় শ্রমিক, জেলে, কৃষক, মাঝি, রাখাল আর কবি, শিক্ষক মিলেমিশে একাকার।

আমাদের মহামিলনের সন্ধিক্ষণে নিজেকে খাপ-খাওয়াতে না পেরে, সূর্যি মামা লজ্জা পেয়ে যদি শহরের দালান কোঠার আড়ালে মুখ না লুকাতো, তাহলে আমরা সেখানে আরো অনেকক্ষণ থাকতে পারতাম।



সেই আড্ডায় পাঠ করছিলাম একই স্থানে আগের ভ্রমণের স্মৃতিচারণ করে লিখিত একটি কবিতা। সকলে মিলে খুব চমৎকার একটি সময় কাটিয়েছি। আগামীতে এই ধরনের আড্ডাগুলো আরো বৃদ্ধি পাবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ
১৩ মার্চ ২০২২ খ্রি.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ