প্রথম
সন্তানের জন্মের জন্য একজন পিতা যতটা আনন্দিত হন। প্রথম বইয়ের জন্মের জন্যও একজন লেখক
ঠিক ততটাই আনন্দিত হন। তবে একজন পিতা ও একজন লেখক এর মধ্যে পার্থক্য হল এই যে, একজন
পিতা যখন দ্বিতীয় বার পিতা হন- তখন প্রথমবার পিতা হওয়ার মত আনন্দ অনুভব করেন না।
কিন্তু একজন লেখক যখন তার দ্বিতীয় বইয়ের জন্ম দেন (প্রকাশ করেন), তখন প্রথম বই জন্মের থেকেও বেশি আনন্দিত হন। কেননা দ্বিতীয় বইয়ের মাধ্যমে একজন লেখক তার লেখা প্রথম বই থেকে আরো বেশি পূর্ণতা নিয়ে আবির্ভূত হন। ফলে দ্বিতীয় বই প্রকাশের পর তিনি প্রথমবার প্রকাশ করা বই থেকে আরো বেশি আনন্দিত হন। কিন্তু একজন পিতা দ্বিতীয় সন্তান জন্ম দিয়ে তেমনটা আনন্দিত হন না। অর্থাৎ পিতৃত্বের স্বাদের পূর্ণতা- একজন পিতা তার প্রথম সন্তান জন্মদানের মাধ্যমে পেয়ে যান। আর একজন লেখক যত বেশি বই প্রকাশ করেন- তত বেশি পরিপূর্ণ হয়ে উঠেন।
একইভাবে
তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম অথবা আরো যত বেশি বই প্রকাশিত হবে, একজন লেখক তত বেশি আনন্দিত
হবেন। তার প্রথম সন্তান তথা প্রথম বইয়ের জন্ম উৎসব যত আকর্ষণীয় এবং বর্ণিল হবে, তার
দ্বিতীয়, তৃতীয় অথবা এর পরবর্তী বইগুলো প্রকাশের পর লেখক তার বইয়ের উৎসব আরও বেশি
বর্ণিল ও আকর্ষণীয় করেন বা করতে চান।
কিন্তু বেশিরভাগ লেখকদেরই ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ অবস্থা। একটি বই প্রকাশের টাকা জোগাড় করতে যেখানে লেখকের নানা হিসাব কিতাব মিলাতে হয়, সেখানে বই প্রকাশের উৎসব করা লেখকের জন্য বিরাট বাহুল্য।
কিন্তু
এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ও ভাগ্যবান কবি জনাব মো. আ. কুদ্দুস। তিনি তাঁর প্রতিটি বই প্রকাশনা
উৎসব পূর্বের উৎসব সমূহ থেকেও আরো বেশি বর্ণিল করে উদ্যাপন করতে পারেন। তিনি উচ্চপদস্থ
একজন সরকারি কর্মকর্তা- শুধু এই জন্য নয়, বরং তাঁর একটি সুন্দর, সৃজনশীল মন রয়েছে-
এই জন্য। একই সাথে তাঁর রয়েছে একদল উদ্যমী সহকর্মী ও একদল সৃজনশীল সহকবি। যারা তাঁর
প্রতিটি আয়োজনকে সার্থক ও সুন্দর করতে নিজের পুরোটা ঢেলে দিতে সর্বদা সচেষ্ট হন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সম্মানিত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার রচিত অষ্টম কাব্যগ্রন্থ ‘মঞ্জুকেশিনী’। গতকাল সন্ধ্যায় এই বইটির প্রকাশনা উৎসব একটি জাঁকজমক ও সফল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। ‘হেমন্তের বই পার্বণ’ শিরোনামে ‘মঞ্জুকেশিনী’র জন্ম উৎসব সফল করতে একত্রিত হন জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের লেখক, সাংবাদিক, কবি ও শিক্ষকবৃন্দ এবং জেলা শহরের নানা পর্যায়ের সুধীজন।
অনুষ্ঠানে জেলা সকল সুধীজনের সামনে কবি ও গীতিকার জনাব মো. আ. কুদদূস মহোদয় ও তাঁর কাব্য সত্তা এবং তাঁর বই ‘মঞ্জুকেশিনী’ কাব্যগ্রন্থের সম্পর্কে কিছু বলতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ
২৬
নভেম্বর ২৩
ছবি কৃতজ্ঞতা: জুনায়েদ সাদ্দাম ব্যাপারী ভাই।
0 মন্তব্যসমূহ