প্রতিদিন কত মানুষ কত ভাবে মৃত্যুবরণ করে। সব মৃত্যু আমাদের মনকে নাড়া না দিলেও কিছু কিছু মৃত্যু আমাদের মনকে নাড়া দিযে যায়। অরিত্রীর অত্মহত্যা আমাদের কি কিছু শিক্ষা দিয়ে গেলো না?
ভাবছি অরিত্রী যে
কারণে আত্নহত্যার করেছে সে কারণটি কি খুব বেশি বড় ছিলো!জানি বাবা-মার অপমান কোন
সন্তানই মেনে নিতে পারেনা। অরিত্রীও পারে নি, তবে অরিত্রীর কাছে সুযোগ ছিলো,
ভিন্নভাবে সে তার বাবা-মার অপমানের প্রতিশোধ নিতে। যেমন ধরুন, সে পরবর্তীতে
ভালোভাবে লেখাপড়া করে, স্কুল সেরাছাত্রী হয়ে বাবা-মার মুখ উজ্জ্বল কতে পারত। তার
কাছে সুযোগ ছিলো সে বড় হয়ে; দেশের নামকড়া কোন ব্যাক্তি হয়ে, তার বাবা-মার নাম
দেশময়-বিশ্বময় ছড়িযে দিতে। কিন্তু সে তা করেনি। সে আত্মহত্যার পথই বেছে নিলো।
কেন এটা করলো অরিত্রী?
আসলে জীবন মানে যে সুখ-দুঃখের মেলবন্ধন। বাধা-বিপত্তি আর প্রতিকুলতা পাশ কাটিয়ে “লক্ষ্য” অর্জন করার নামই যে সফলতা, সেটা হয়তো অরিত্রী জানে না। অরিত্রী যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ে সে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা পাঠ্যক্রম হয়তো অরিত্রীকে তা শিক্ষা দেয়নি। এমন শিক্ষা হয়তো তার দেশেও নেই। তাই এরকম পরিস্থিতে অরিত্রী আত্মহত্যাকেই একমাত্র পথ ভেবে নিয়েছে। তার মনোবল এতাটা শক্ত ছিলো না যে বাবা-মার অপমান হজম করে নিজেকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করবে।
আমাদের নতুন প্রজম্মের আর কতজন শিক্ষার্থী এমন দূর্বল মনোবল, হীনচেতা মনোভাব নিয়ে বড় হচ্ছে তার হিসেব কার কাছে আছে?। কে জানে কতজন শিক্ষার্থী তার মনের মধ্যে কত ঝড়-তুফান নিয়ে বড় হচ্ছে, কত জন শিক্ষার্থী কত সমস্যার সমাধান না পেয়ে মনে মনে আত্নহত্যার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তাই নিজের সন্তানকে সময় দিন, তাকে আপনার এমন বন্ধু বানান যাতে সে মনের মধ্যে কোন অসংকোচ বয়ে না বেড়ায়।নিঃসংকোচে আপনাকে বলতে পারে মনের মধ্যে জমানো কোন ব্যথার কথা, মরাত্মক কোন দূর্ঘটনা ঘটার আগেই আপনার সন্তানের সমস্যার জানার চেষ্টা করুন এবং তা সমাধানের চেষ্টা করুন। তার মনোবল বৃদ্ধি করুন।
তাকে বলুন যে, হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ মিলেই জীবন, যার হাসি নেই সে মৃত, যার দুঃখ নেই সেও মৃত্। তাকে বলুন আজকের পৃথিবীতে যারা সফলতার উচ্চ শীখরে অবস্থান করছে তারা সবাই অনেক প্রতিকুলতা কে পাশ কাটিয়ে, বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করে, জীবনের সাথে লড়াই করে, সংগ্রাম করেই সফলতা অর্জন করেছে।আমাদের সবাইকেও সে পথেই চলতে হবে।
অরিত্রীর আত্নহত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি কামনা করছি।
মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ
০৪ ডিসেম্বর ২০১৮খ্রি.
0 মন্তব্যসমূহ